পেকুয়া প্রতিনিধি:
কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার উজানটিয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মিনহাজ উদ্দিনের বিরুদ্ধে স্ত্রী উম্মে সালমাকে যৌতুকের দাবিতে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। রোববার (২২ জুন) সন্ধ্যায় পেকুয়া উপজেলা প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী নিজেই এই অভিযোগ তোলেন।
সংবাদ সম্মেলনে উম্মে সালমা জানান, গত বছরের সেপ্টেম্বরে প্রেমের সম্পর্কের মাধ্যমে মিনহাজ উদ্দিনকে বিয়ে করেন তিনি। বিয়ের পরপরই যৌতুকের জন্য চাপ সৃষ্টি করা হয়। শুরুতে তিন লাখ টাকা দাবি করলে তার পরিবার ধারদেনা করে সেই অর্থের ব্যবস্থা করে দেয়।
তবে কয়েক মাস যেতে না যেতেই মিনহাজ আরও পাঁচ লাখ টাকা দাবি করেন বলে জানান সালমা। মিনহাজ জানিয়েছিলেন, তিনি ওই অর্থ দিয়ে বিদেশে যেতে চান। সালমার পরিবারের পক্ষে অতিরিক্ত অর্থ দেওয়া সম্ভব না হওয়ায় তার ওপর শুরু হয় মারধর ও মানসিক নির্যাতন।
সালমা অভিযোগ করেন, সর্বশেষ ২১ জুন বিকেলে মিনহাজ ও তার পরিবারের সদস্যরা মিলে তাকে মারধর করে অজ্ঞান অবস্থায় রাস্তায় ফেলে রেখে যায়। পরে স্থানীয় ইউপি সদস্য ও এলাকাবাসীর সহযোগিতায় তাকে উদ্ধার করে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
তিনি আরও বলেন, বিয়ের সময় দেনমোহর ধরা হয়েছিল ১০ লাখ টাকা। কিন্তু পরে প্রতারণার মাধ্যমে কাবিননামায় তা ৯ লাখ দেখানো হয়, যার অর্ধেক নগদ দেওয়া দেখিয়ে বাকিটা বাকি রাখে মিনহাজের পরিবার।
উম্মে সালমার অভিযোগ, “আমি একজন সাধারণ পরিবারের মেয়ে। মিনহাজ এবং তার পরিবার ক্ষমতাসীন দলের পরিচয় ব্যবহার করে বারবার আমাকে নির্যাতন করেছে। এখন আমি প্রশাসনের কাছে সুবিচার চাই।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সিরাজুল মোস্তফা বলেন, “আমরা লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত চলছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এদিকে, ভুক্তভোগীর পরিবার বলছে, এখন পর্যন্ত অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, যা স্থানীয়ভাবে ক্ষোভ ও আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
স্থানীয় মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, যৌতুকের দাবিতে সহিংসতা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে বিচার নিশ্চিত করতে হবে, যেন দোষীরা শাস্তি পায় এবং ভুক্তভোগী নারী সুরক্ষা পান।
